যেই বিষয়ে ফেল করলাম তার নাম পরিসংখ্যান(Statistics)।একেবারেই নতুন।১ম সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ হইতে বসিল কিন্তু তখন পর্যন্ত আমি 'পরিসংখ্যান কাকে বলে?' এই সংজ্ঞাটিও আয়ত্ত করতে পারি নাই।এখন যদিও ইচ্ছার বিরুদ্ধে
পরিসংখ্যান পড়িয়া যাচ্ছি।আল্লাহ মালুম! কবে এই যন্ত্রণা থেকে রেহাই বাঁচব।যাই হোক,এবার মূল বিষয়ের হাল ধরি।সম্মানজনকভাবে NDC-তে ১ম সেমিস্টারে কেউ ফেল করলে তাকে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিশেষ খাতির যত্ন (Remedial Class)করিয়া থাকে।শর্ত হইল এই খাতির তারাই পাবে যারা ফেল করা বিষয়ে ২৬ নম্বরের নিম্নে পাবে।আমি এই বিশেষ খাতিরের শর্তপূরণ করতে সমর্থ হই।আমি ২৪ নম্বর পাইয়া এই খাতিরের আওতাভুক্ত হই।সম্মানীস্বরুপ আমি প্রতি শুক্র ও শনিবার সকাল ৮.৩০ থেকে ১১.০০ টা পর্যন্ত(২.৩০ ঘন্টা!!) পরিসংখ্যান বিষয়ের লেকচার কলেজে গিয়ে শুনি।ইহা মাগনা নহে ভাই :( গুনিয়া গুনিয়া ৭০০ ৳ আমাকে সম্মানীর মূল্য দিতে হয়েছে।
একদিন কলেজে Remedial Class করতে গিয়ে দেখি কলেজে English Club এর ফেয়ার হচ্ছে।সেখানে Nescafe এর একটা স্টল ছিল।ফ্রীতে নাকি কফি দেওয়া হচ্ছে।রেমেডিয়েল ক্লাসে ১০ মিনিটের ব্রেক-আপ ছিল সেই ফাকে স্টলে গিয়ে এক কাপ কফি নিয়ে নিলাম।কফি খেতে খেতেই আরেক স্টলে গেলাম।সেখানে দেখি একটা খামে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।কিসের একটা চিঠি লেখা প্রতিযোগিতা হবে তাই চিঠিতে করেই তার প্রচার হচ্ছে।ভালোই আইডিয়া।আমিও একটা নিলাম।
প্রতিযোগিতার মূল বিষয়ঃ বঙ্গবন্ধুর কাছে তোমার মনে কথা লিখে পাঠাও।
বিস্তারিত জানতে নিচের ইমেজটা দেখুন।
তিনটি বিভাগে প্রতিযোগিতা হবে।প্রতি বিভাগের ১ম স্থান অধিকারীকে একটা ল্যাপটপ দেওয়া হবে।আমার একটা Asus এর ল্যাপটপ আছে,আরেকটা পেলে মন্দ নয়।এই আশায় লিখব বলে মনে মনে ঠিক করলাম।কিন্তু বাসার পরিবেশ তখন আমার অনুকূলে নয়।সারাদিনের পড়ার চাপে এই চিঠির কথা বেমালুম ভুলে গেলাম।হঠ্যাৎ একদিন মনে পড়ল।চিঠিটা খুলে দেখলাম জমা দেওয়ার উপায় ২টি।
১) তাদের ঠিকানায় পাঠাতে হবে।
২)ই-মেইল করে দিতে হবে।
ও আচ্ছা,এখনও তো বলাই হল না,এই প্রতিযোগিতার আয়োজক কারা।বৃত্তান্ত'৭১ নামে একটা সংগঠন এর আয়োজক।বঙ্গবন্ধুর ৯৩ তম জন্মদিন উপলক্ষে তাদের এই চিঠি উৎসব।সময় স্বল্পতার কারণে ২য় উপায়টাই বেছে নিলাম।দ্রুত চিঠি লিখে মেইল করে দিলাম।ই-মেইল করেও আশঙ্কা ছিল তারা মেইল ঠিকমত চেক করবে কিনা।তাই তাদের ফেসবুক ফ্যানপেজটা খুঁজে মেসেজ করলাম যে মেইল পেয়েছে কিনা।রিপ্লেতে বলা হল পেয়েছে এবং আমাকে ফলাফলের দিন তারিখ সময়সূচি সময়মত জানিয়ে দেওয়া হবে।যাক,এবার নিশ্চন্ত।
গত ২৯/৩/১৩ তারিখ বিকেলে এক ভাইয়া আমার সেল ফোনে কল দিয়ে জানানো আমার পাঠানো চিঠিটা সেরা ৩০০ চিঠির একটিতে মনোনীত হয়েছে।স্ববান্ধব আমাকে 'বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর'-'চিত্রাপ্লাজাতে' আমন্ত্রণ জানানো হল।
২৯ মার্চ,সকাল ১০.৩০ টা।
আমি ও আমার দোস্ত আবির শিল্পকলায় হাজির।অনুষ্ঠান শুরু ১১.৩০ এ।বেশী তাড়াতাড়ি আশায় আমার দোস্ত আমার উপর বেজায় রাগ।তাকে মোবাইলে Thor গেমস খেলতে দিয়ে কিছুটা ক্ষান্ত করিলাম।সময়মত অনুষ্ঠানের সূচনা হইল।প্রধান অতিথি দেখিয়া তেমন খুশি হইলাম না।কেননা আমি রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে ১০০ হাত দূরে থাকি।
যাক মোবাইল অতিথিগণ তাদের মূল্যবান লেকচার দিচ্ছে আর আমি আমার দোস্ত আবিরের থেকে মোবাইল নিয়ে উইকিপিডিয়াতে গুগোল সাইন্স ফেয়ার নিয়ে বিস্তর জ্ঞান অর্জন করছি।অনেকক্ষন পর দেখলাম বক্তব্যর পালা শেষ এবার মূল আকর্ষণ পুরস্কার বিতরণ।
প্রথমে সেরা ৭১ টি চিঠির লেখকদের পুরস্কার দেওয়া হইল।ইচ্ছা ছিল আমার নামটাও উচ্চারিত হইবে কিন্তু ঈশ্বরের তা ইচ্ছা নয়।তাই ৭১ টির তালিকায় আমি নেই। :( ৭১ জনের মধ্যে ৬৮ জনের নাম বলার পর বাকি রইল ৩ জন।বৃত্তান্ত ৭১'এর নির্বাহী পরিচালক তানভীর ভাই বললেন এখন যেই ৩ জনের নাম বলা হবে তারা ল্যাপটপ বিজয়ী।মনে হইল ঈশ্বর যাহা করেন তা মঙ্গলের জন্যই করেন।আশা জাগিল ল্যাপটপ পাওয়ার।কিন্তু ইহাও ঈশ্বরের ইচ্ছা হয়।বোধ করি ঈশ্বর আমার জন্য আরও উত্তম কিছু রাখিয়াছেন ভবিষ্যতে এই বলিয়া
ইহাই সেই ক্রেস্ট ! |
বিদ্রঃ কোনো মিষ্টি/বিরিয়ানীর প্যাকেট নজরে পড়ে নাই তাই অপেক্ষা করার মানে হয় না।ক্রেস্ট লইয়া চম্পট।
0 comments:
Post a Comment